
টেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিলেন কেন, তা নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট কারণ জানাননি বিরাট কোহলি। তবে পরদিনই অনুষ্কা শর্মা দাবি করলেন, শুধু ক্রিকেটীয় চ্যালেঞ্জই নয়, মাঠের বাইরের প্রচুর চ্যালেঞ্জ সামলাতে হয়েছে বিরাটকে।







অথচ আগে ভেবেছিলেন যে ভালো অভিপ্রায় থাকলেই জীবনে এগিয়ে যাওয়া যায়। তার জেরে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি নাম না করে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বোর্ডকে তোপ দাগলেন বিরাট-পত্নী?
রবিবার ফেসবুকে অনুষ্কা লেখেন, ‘২০১৪ সালে (মহেন্দ্র সিং ধোনি টেস্ট অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন, ব্যাটন তুলে দিয়েছিলেন বিরাটের হাতে) আমরা কত ছোটো এবং সাদাসিধে ছিলাম।
ভাবতাম যে শুধুমাত্র ভালো অভিপ্রায়, ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং মানসিকতা আপনাকে জীবনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। সেগুলি অবশ্যই (জীবনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে) ঠিক।







তবে তাতে চ্যালেঞ্জের মুখেও পড়তে হয়। তুমি যে সব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছ, তা সর্বদা মাঠের ভিতরে নয়। কিন্তু এটাই তো জীবন? তাই নয়? জীবন সেখানে আপনার পরীক্ষা নেয়, যেখানে পরীক্ষা দিতে বলে তেমন আশাও করেননি।
কিন্তু সেখানেই তোমায় সবথেকে বড় পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়। মাই লাভ, তোমার জন্য আমি গর্বিত, কারণ কোনও বিষয়কে তোমার ভালো অভিপ্রায়ের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে উঠতে দাওনি।’
বিরাট-ঘরণীর সেই বার্তা ঘিরে স্বভাবতই জল্পনা তৈরি হয়েছে। একটি মহলের তরফে প্রশ্ন উঠছে, মাঠের বাইরের চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে কি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিসিআই) দোষারোপ করেছেন অনুষ্কা? যে বোর্ডের সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরে বিরাটের ‘ঠান্ডা যুদ্ধ’ চলছে। এমনকী বোর্ডের সভাপতি এবং বিরাট পরস্পর-বিরোধী মন্তব্য করেছেন।







উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে বিরাটকে একদিনের ক্রিকেটে ভারতীয় দলের অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই। তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। পরদিনই সৌরভ দাবি করেছিলেন, ‘বিসিসিআই এবং নির্বাচকরা মিলিতভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসলে টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব না ছাড়ার জন্য বিরাটকে অনুরোধ করেছিল বিসিসিআই।
কিন্তু ও সেটায় রাজি হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে সাদা বলের দুটি ফর্ম্যাটে দু’জন ভিন্ন অধিনায়ক রাখাটা ঠিক হবে বলে মনে করেননি নির্বাচকরা।’ সঙ্গে বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট দাবি করেছিলেন, একদিনের ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব নিয়ে বিরাটের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা হয়েছে।
তবে কী কথা হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি সৌরভ। কয়েকদিন পরেই বিরাট বলেছিলেন, ‘যখন আমি বিসিসিআইকে বলি যে আমি টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছাড়তে চাই, তখন তা ভালোভাবে গ্রহণ করা হয়েছিল।
কোনওরকম দ্বিধাবোধ ছিল না। আমায় বলা হয় যে এটা প্রগতিশীল পদক্ষেপ। সেই সময় জানিয়েছিলাম যে আমি একদিনের ক্রিকেট এবং টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিতে চাই না।







আমার তরফে বার্তা স্পষ্ট ছিল। আমি এটাও জানিয়েছিলাম, বিসিসিআই কর্তা এবং নির্বাচকরা যদি মনে করেন যে অন্য ফর্ম্যাটে আমার নেতৃত্ব দেওয়া উচিত নয়, সেটাও ঠিক আছে।’ বিরাটের সেই মন্তব্যের পরই তোপের মুখে পড়েছিলেন সৌরভ।
এবার বিরাট অধিনায়কত্ব ছাড়ার পিছনে সৌরভের হাত দেখতে পাচ্ছেন নেটিজেনদের একাংশ। বিরাট অবশ্য বিদায়বার্তায় কাউকে দোষারোপ করেননি। আবেগে সিক্ত বার্তায় শনিবার বিরাট বলেন, ‘দীর্ঘ যাত্রাপথে প্রচুর সাফল্য এসেছেে।
ব্যর্থতারও সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু কখনও প্রয়াস বা আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি হয়নি। আমি যা কিছু করি, তাতে বরাবর ১২০ শতাংশ উজাড় করে দেওয়ার তত্ত্বে বিশ্বাস করে এসেছি।
আমি যদি সেটা করতে না পারি, তাহলে আমি ভালোভাবে জানি যে সেটা করা আমার পক্ষে ঠিক নয়। আমার হৃদয়ে পুরোপুরি স্বচ্ছতা আছে। আমার দলের প্রতি আমি অসত্ হতে পারব না।’







Leave a Reply