আফ্রিকানদের কাঁপন ধরাবে বিরাট, কঠিন সতর্কবার্তা দিলেন জন্টি রোডস

ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ান ডে ম্যাচ শুরুর আগে তিনি যথেষ্ট উদ্বেগে। তাঁর আশঙ্কা, চাপমুক্ত বিরাট কোহলি না ব্যাট হাতে তাণ্ডব শুরু করেন ওয়ান ডে সিরিজ়ে। যে কারণে তাঁর দেশের ক্রিকেটারদের একটা সতর্কবার্তা দিতে চান জন্টি রোডস— বিরাটকে নিয়ে চিন্তায় থাকো!

বুধবার পার্লে নতুন ক্রিকেট জীবন শুরু হচ্ছে বিরাটের। যেখানে তিনি আর দলের অধিনায়ক নন, শুধু এক জন সাধারণ সদস্য। খেলতে হবে কে এল রাহুলের নেতৃত্বে। আর এই বিরাট কিন্তু আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন জন্টি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাসকাট থেকে ভিডিয়ো কলে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন ব্যাটার বলছিলেন, ‘‘বিরাট কিন্তু খোলা মনে খেলবে এখন। ওর উপরে কোনও চাপ নেই। বিরাট বোঝাতে চাইবে, নেতৃত্ব দেওয়া ছাড়াও ও দলের অনেক কাজে লাগতে পারে।’’

দক্ষিণ আফ্রিকার কি তা হলে বিরাটকে নিয়ে উদ্বেগে থাকা উচিত? জন্টির জবাব, ‘‘অবশ্যই। আমার তো এখনই চিন্তা হচ্ছে। আমি যদি দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সঙ্গে থাকতাম, তা হলে অবশ্যই সকলকে বিরাট নিয়ে সতর্ক থাকতে বলতাম।’’ তার উপরে রাতে জানা গেল, কাগিসো রাবাডাকে ওয়ান ডে সিরিজ় থেকে বিশ্রাম দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অভিজ্ঞ পেসার না থাকায় অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার উদ্বেগ আরও
বাড়ার কথা।

বিরাটের এই ভাবে টেস্ট নেতৃত্ব ছাড়া নিয়ে কী বলবেন? ক্রিকেটবিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা বলে উঠলেন, ‘‘বিরাট কেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা তো বলতে পারব না। ওর নিশ্চয়ই কোনও কারণ ছিল। কিন্তু অধিনায়ক বিরাটকে না পেলেও ক্রিকেটার বিরাটকে পাবে ভারত।

এটাও বিশাল ব্যাপার।’’ বাছাই করা সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে নিয়ে জন্টির মন্তব্য, ‘‘খেলাটার প্রতি বিরাটের আবেগ নিয়ে কখনও কোনও প্রশ্ন ছিল না। এখনও নেই। ও সব সময় একশো শতাংশ দিয়ে এসেছে।’’

অধিনায়কত্ব কতটা চাপ তৈরি করতে পারে এক জন ক্রিকেটারের উপরে? জন্টি বলছেন, ‘‘নেতৃ্ত্ব একটা চাপ তৈরি করে। আমি যেমন কোনও দিন অধিনায়ক হতে চাইনি। সব সময় খোলা মনে ক্রিকেটটা খেলতে চেয়েছি।’’ সঙ্গে সঙ্গেই অবশ্য বলছেন, ‘‘তার মানে এই নয় যে, নেতৃত্বর প্রভাব বিরাটের ব্যাটিংয়ে পড়েছিল।

অধিনায়ক থাকার সময়ও ও দুরন্ত ব্যাটিং করে গিয়েছে। কিন্তু এটাও ঠিক, এখন আর কোনও চাপ ওর উপরে থাকবে না। নিজের ব্যাটিংটা উপভোগ করতে পারবে। খোলা মনে খেলতে পারবে ও। যেটা প্রতিপক্ষের কাছে চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে।’’

সদ্য টেস্ট দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন কোহলি। এ বার তা হলে কে হতে পারেন ভারতের লাল বলের ক্রিকেট অধিনায়ক? একটু ভেবে জন্টি বললেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমি অন্ধকারেই আছি। এই তো কে এল রাহুল তিনটে ওয়ান ডে ম্যাচে দলের নেতৃত্ব দেবে। তার পরে কী হবে, সেটা বলা কঠিন।’’

এই ভারতীয় দলটার আসল শক্তি যে বোলিং, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন জন্টি। বলেছেন, ‘‘অধিনায়ক বিরাট, দলের সাপোর্ট স্টাফ মিলে একটা দারুণ বোলিং আক্রমণ গড়ে তুলেছে। যেখানে যশপ্রীত বুমরার মতো ভয়ঙ্কর বোলার আছে। মহম্মদ শামির মতো বুদ্ধিমান বোলার আছে।

আইপিএলে পঞ্জাবের হয়ে কাজ করার ফলে আমি জানি শামি কতটা বিপজ্জনক বোলার। সঙ্গে অশ্বিন। এই বোলিং আক্রমণ যে কোনও পিচে ভয়ঙ্কর।’’ এ রকম একটা শক্তিশালী দলকে টেস্ট সিরিজ়ে হারানোর ফলে যে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটে পরিবর্তনের ঢেউ আসবে, তা মনে করেন এই প্রাক্তন ক্রিকেটার।

লেজেন্ডস লিগ ক্রিকেট খেলতে এই মুহূর্তে মাসকটে আছেন জন্টি। যেখানে তিনি বিশ্ব একাদশের সদস্য। যাদের অন্যতম প্রতিপক্ষ বীরেন্দ্র সহবাগের ‘ইন্ডিয়ান মহারাজা’ দল। ২০ তারিখ থেকে খেলা হবে ওমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে (রাত আটটা থেকে দেখা যাবে সোনি স্পোর্টসে)।

প্রতিপক্ষ সহবাগ নিয়ে কী বলবেন? একটু হেসে জন্টির জবাব, ‘‘আমি যখন খেলতাম, তখন ফিল্ডিং করার সময় ব্যাটসম্যানের কাছাকাছি দাঁড়াতাম। যাতে খুচরো রানগুলো আটকানো যায়। কিন্তু বীরু ব্যাট করার সময় বেশ দূরেই থাকব। মনে হয় না, ও সিঙ্গল নেওয়ার ব্যাপারে উৎসাহী থাকবে।’’

ফিল্ডিংকে শিল্প করে তোলা এই প্রাক্তন ক্রিকেটার তাঁর দেখা সেরা তিন ফিল্ডারের তালিকায় রাখছেন কায়রন পোলার্ড, সুরেশ রায়না এবং এবি ডিভিলিয়ার্সকে। আর এই মুহূর্তে খেলছেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে? জন্টি বলে গেলেন, ‘‘রবীন্দ্র জাডেজা। ও অন্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে ফিল্ডিংটা।’’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*