কাজল যায়না মরলে স্বভাব যায়না ধুলে, এশিয়া লায়ন্সদের কাছে ফাইনাল হেরে যাকে দুষলেন ওয়াটসন

গত বছর ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলো কাতার। লিও মেসির বিশ্বজয়ের মঞ্চের দখল গত কয়েকদিন নিয়েছিলো ক্রিকেট। মধ্যপ্রাচ্যের দেশের ক্রিকেটের ফুল ফুটতে দেখলেন অনুরাগীরা।

কাতার ক্রিকেটে বসন্ত নিয়ে হাজির হলো লেজেন্ডস লীগ ক্রিকেট। বিগত বছরের কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের ফের একবার ব্যাট-বল হাতে বাইশ গজের মহারণে মাততে দেখতে গ্যালারি ভরালো উৎসাহী জনতা। তিন দলীয় এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল ছিলো গতকাল।

মুখোমুখি হয়েছিলো এশিয়া লায়ন্স এবং ওয়ার্ল্ড জায়ান্টস।শাহীদ আফ্রিদি, জ্যাক ক্যালিসদেরদেখতে ৪০ হাজারের গ্যালারিতে একটি আসনও ফাঁকা ছিলো না।লীগ পর্যায়ে ৪টি করে ম্যাচ খেলেছিলো প্রতিটি দলই। ৩টি জয় নিয়ে তালিকায় শীর্ষে শেষ করেছিলো ওয়ার্ল্ড জায়ান্টস।

সরাসরি ফাইনালের ছাড়পত্র আদায় করে নিয়েছিলো তারা। এলিমিনেটরে ইন্ডিয়া মহারাজাসকে হারিয়ে ফাইনালে তাদের মুখোমুখি হয়েছিলো এশিয়া লায়ন্স। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, আফগানিস্তানের মত দেশের ক্রিকেটাররা ছিলেন এশিয়া লায়ন্স দলে।

শেষ যুদ্ধে ফলাফল গেলো তাদেরই দিকে। ওয়ার্ল্ড জায়ান্টসকে ৭ উইকেটে হারিয়ে লেজেন্ডস লীগ ক্রিকেটের তৃতীয় সংস্করণের ট্রফি ঘরে তুললো তারা। ম্যাচ শেষে শাহীদ আফ্রিদির নেতৃত্বাধীন এশিয়ান সিংহদের উৎসবে মাততে দেখা গেলো দোহার মাঠে।

টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নিয়েছিলেন ওয়ার্ল্ড জায়ান্টস অধিনায়ক শেন ওয়াটসন। তিনি নিজে ০ রান করে ফেরেন ফাইনালে। এশিয়া লায়ন্সের নিয়ন্ত্রিত বোলিং-এর সামনে ছন্নছাড়া লাগলো জায়ান্টস ব্যাটিং’কে। কেবল জ্যাক ক্যালিস (৭৮) এবং রস টেলর (৩২)-এর সৌজন্যে সন্মানজনক স্কোরে পৌঁছায় তারা।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে এশিয়া লায়ন্স(AL) ওপেনারদের জোড়া অর্ধশতকে সহজেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছায় তারা, জিতে নেয় খেতাব। ম্যাচে স্ট্র্যাটেজি সাজাতে যে ভুলচুক হয়েছে তা মেনে নিলেন পরাজিত অধিনায়ক শেন ওয়াটসন।

পিচ নিয়ে ধোঁয়াশা ছিলো, জানাচ্ছেন ওয়াটসন-

লেজেন্ডস লীগ ক্রিকেটের দ্বিতীয় মরসুমে ট্রফি জিতেছিলো ওয়ার্ল্ড জায়ান্টসস দল। তৃতীয় মরসুমেও লীগ শীর্ষে উঠে ফাইনালে যাওয়ায় পরপর ট্রফির আশা দেখিয়েছিলেন ব্রেট লি, জ্যাক ক্যালিস’রা।

কিন্তু এশিয়া লায়ন্সের হুঙ্কারে শেষমেশ বোতলবন্দী হতেই হলো জায়ান্টসদের। ম্যাচে হিসেবনিকেশে ভুল হয়েছিলো বলে স্বীকার করেছেন তাদের অধিনায়ক শেন ওয়াটসন। সঞ্চালকের প্রশ্নের উত্তরে ওয়াটসন বলেন, “এই পিচে আবদুর (রাজ্জাক) দুর্দান্ত বোলিং করেছে।”

দলের ব্যর্থতার জন্য পিচের রহস্য না বুঝতে পারাকেও দায়ী করেছেন তিনি। জানান, “এই উইকেট থেকে কি আশা করা যেতে পারে সেই সম্বন্ধে কোনো স্পষ্ট ধারণা আমাদের ছিলো না। এখন মনে হচ্ছে টসে জিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করলেন মনে হয় ভালো করতাম। তবে রাজ্জাক আজ সত্যিই ভালো বোলিং করেছে। শুরুর ওভারগুলোতে আমাদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলেছিলো।”

ওয়াটসন (Shane Watson) নিজে একজন অলরাউন্ডার ছিলেন। ম্যাচ শেষে আরেক অলরাউন্ডারের পারফর্ম্যান্সের প্রশংসায় মাততে দেখা গেলো তাঁকে। জানান, “আজ উইকেট একদমই সহজ ছিলো না। কঠিন পরিস্থিতিতে জ্যাক ক্যালিস যে ইনিংসটা খেললো তা অসাধারণ।

শেষ দুই ম্যাচে ও অনবদ্য ব্যাটিং করেছে। নিজের গোটা কেরিয়ার জুড়েই ও এমনটা করে এসেছে। ক্যালিস জানে কখন গতি বাড়াতে হয়। আজ ওর ব্যাটিং দেখে একটা সুন্দর অভিজ্ঞতা হলো।” ২০ ওভারে ১৪৭ রান তুলেছিলো ওয়ার্ল্ড জায়ান্টস। রান যথেষ্ঠ ছিলো বলেন মত ওয়াটসনের।

“উইকেট যেরকম ছিলো তাতে ১৪৭ ঠিকঠাক স্কোর। আমরা বল হাতে শুরুটা ভালো করতে পারি নি। দিলশান ও থারাঙ্গা দুজনের দুর্দান্ত ব্যাট করেছে। বিশেষ করে আমাদের স্পিনারদের বিরুদ্ধে। আমার মনে হয় আমাদের আরেকটু ভালো বোলিং করা দরকার ছিলো। আগের ম্যাচে সময়ের সাথে সাথে পিচ মন্থর হয়ে পড়েছিলো। আজ তা হয় নি একদমই।”

ফাইনালে মাঠে নামেন নি ক্রিস গেইল এবং অ্যারন ফিঞ্চ। তাদের অভাব কতটা ভুগিয়েছে? প্রশ্নের উত্তরে ওয়াটসন জানান, “ওদের অভাব তো অনুভূত হবেই। কাউকে না কাউকে ওদের বদলি হিসেবে খেলতেই হত। ওয়ার্ল্ড জায়ান্টস দলে কিংবদন্তিদের ভীড়।

এশিয়া লায়ন্স, ইন্ডিয়া মহারাজাসদের বিরুদ্ধে খেলা একটা দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। এখানে অংশ নিতে পেরে আমরা গর্বিত, ধন্যবাদ জানাতে চাই উদ্যোক্তাদের। আজ সর্বোচ্চ মানের ক্রিকেটই খেলা হয়ছে।”

আয়োজক দোহাকেও প্রশংসায় ভরিয়েছেন ওয়াটসন। বলেন, “প্রথমবার এখানে এলাম। খুব সুন্দর শহর, দারুণ অভিজ্ঞতা হলো। আমরা সবাই আগামী বছরে এখানে ফিরে আসার অপেক্ষায় রয়েছি।”

দেখুন সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকারের ভিডিও –

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*