ক্রিকেট ইতিহাসে নিজ দেশকে ডুবিয়েছেন ৫ তারকা ক্রিকেটার, ভারতীয় ১ জন

আইসিসির প্রতিটি টুর্নামেন্টকে সবচেয়ে বড় আসর বলে গণ্য করা হয় আর সমস্ত খেলোয়াড় নিজের দেশকে বিশ্বকাপ জেতানোর জন্য মুখিয়ে থাকেন।

তবে ক্রিকেট ইতিহাসে এমন কতগুলি ঘটনা ঘটেছে যেখানে একজন ক্রিকেটারই নিজের দেশকে ডুবিয়েছেন এবং তারা রাতারাতি হিরো থেকে ভিলেন হয়ে গেছেন দেশের মানুষদের কাছে। এই প্রতিবেদনে তেমনই ৫ জন ক্রিকেটারের নাম বলা হয়েছে:

১) মিসবাহ-উল-হক:

বিশ্বকাপের ইতিহাসে পাকিস্তানি দলের বড় ভিলেন মিসবাহ-উল-হক। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তানের জয়ের জন্য শেষ ৪ বলে ৫ রান দরকার ছিল।

এই সময় ক্রিজে ছিলেন মিসবাহ। সহজ বলটিকে তিনি মাঠের পিছন থেকে পাঠাতে চেয়েছিলেন কিন্তু শ্রীশান্তের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ হাতছাড়া করেন।

এরপর ২০১১ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারত প্রথমে ব্যাট করে ২৬০ রান তোলে। জবাবে পাকিস্তান শুরুটা ভালো করলেও মিসবাহ ৭৬ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলে দলকে সমস্যায় ফেলে দেন এবং ২৯ রানে পরাজিত হয়।

২) সাঈদ আজমল:

২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাকিস্তান প্রথম ব্যাট করে ১৯১ রান করে। এই বিশাল টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া সমস্যায় পড়লেও মাইকেল হাসি কোন আঁচ লাগতে দেননি।

আসলে অস্ট্রেলিয়ার শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৮ রানের দরকার ছিল। বল করতে আসেন সাঈদ আজমল। এই ওভারে মাইকেল হাসি তিনটি ছক্কা ও একটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পাকিস্তানের মুখ থেকে জয় ছিনিয়ে নেন।

৩) বেন স্টোকস:

২০১৯ বিশ্বকাপের নায়ক বেন স্টোকস ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ভিলেন ছিলেন। ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ১৫৫ রান করে। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুরুতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে, কিন্তু মারলন স্যামুয়েলসের অনবদ্য ৮৫ রানের ইনিংসের জেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ চ্যাম্পিয়ন হয়।

আসলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২০তম ওভারে জয়ের জন্য ২২ রান দরকার ছিল। এই সময় বল করতে আসেন বেন স্টোকস। সেই ওভারে কার্লোস ব্রাথওয়েট টানা চারটি ছক্কা হাঁকিয়ে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন চুরমার করে।

৪) যুবরাজ সিং:

যুবরাজকে সবচেয়ে বড় ম্যাচজয়ী খেলোয়াড় হিসেবে গণ্য করা হয়। ২০১১ বিশ্বকাপে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে শরীরে নিয়েও দেশকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন।

এরপর ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ফাইনালে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়ে ভারতীয় দল ১৫ ওভারে ১১০ রান তোলে। এই সময় পাওয়ার হিটার হিসেবে ব্যাট করতে নামেন যুবরাজ সিং।

কিন্তু শেষ ৩০ বলের মধ্যে তিনি ২১ বল খেলে মাত্র ১১ রান করেন। তার এই জঘন্য পারফরম্যান্সের কারণে ভারত শ্রীলঙ্কার কাছে পরাজিত হয়। তবে আরও ২০-২৫ রান বেশি হলে ফলাফলটি অন্যরকম হতে পারতো।

৫) হাসান আলি:

২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তান মুখোমুখি হয়েছিল। গ্রুপ পর্বে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই দলকে বিদায় নিতে হয় সেমিফাইনালের মঞ্চ থেকে। পাকিস্তান প্রথম ব্যাট করে ১৭৭ রান তোলে।

জবাবে অস্ট্রেলিয়া দল ৯৬ রানে টপ অর্ডারের ৫ জন ব্যাটসম্যানকে হারালেও ম্যাথু ওয়েড পরপর তিনটি ছক্কা হাঁকিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে জেতান। এর আগে হাসান আলি ম্যাথু ওয়েডের একটি সহজ ক্যাচ ফেলে দেয়।

ক্যাচটি নিলে হয়তো ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হতে পারতো। এই ঘটনায় পাক সমর্থকরা হাসান আলিকে অশ্লীল ভাষায় তীব্র আক্রমণ করা শুরু করে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*