
সকলের মুখে আপাতত একটাই কথা। চলতি আইপিএল টুর্নামেন্টের সেরা ম্যাচ ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম গুজরাট টাইটান্স। এই ম্যাচের পরতে পরতে এত নাটকীয় মুহূর্ত তৈরি হয়েছিল যে প্রতি মুহূর্তেই দর্শকদের উপরে বাড়ছিল স্নায়ুর চাপ।
রবিবার অহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে একদিকে যেমন রশিদ খানের হ্যাটট্রিক দেখতে পাওয়া গেল, অন্যদিকে সাক্ষী থাকল রিঙ্কু সিংয়ের দুর্দান্ত ফিনিশের। শেষ ওভারে পরপর পাঁচটা ছক্কা হাঁকিয়ে তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সকে এই হাই-স্কোরিং ম্যাচে জিতিয়ে দেন।
রবিবারের ম্যাচ একাধিক ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের সাফল্যের সাক্ষী থেকেছে। শুরুতে বিজয় শঙ্কর মাত্র ২৪ বলে ৬৩ রানের একটা ধামাকাদার ইনিংস খেলেন।
এরপর কলকাতা নাইট রাইডার্সের ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে খেলতে নামা ভেঙ্কটেশ আইয়াক মাত্র ৪০ বলে ৮৩ রান করেন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন নীতীশ রানা। তবে শেষবেলায় প্রচারের যাবতীয় আলো চুরি করে নিলেন রিঙ্কু সিং।
এই ম্যাচের সেরা নির্বাচন করা হয় রিঙ্কু সিংকে। কলকাতা নাইট রাইডার্সকে জেতানোর পর তিনি বেশ খানিকটা আবেগবিহ্বল হয়ে পড়েন। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে তো কেঁদেই ফেললেন তিনি।
বললেন, ‘আমার বাবাকে জীবনে প্রচুর লড়াই করতে হয়েছে। আমি একজন চাষির পরিবারে বড় হয়েছি। আমার জন্য এতদিন ধরে যাঁরা লড়াই করেছেন, এই প্রত্যেকটা ছক্কা আমি তাঁদের জন্য উৎসর্গ করলাম।’
সেইসঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি যে এটা করতে পারব, সেই বিশ্বাস আমার মধ্যে ছিল। রানা ভাই আমাকে নিজের উপরে বিশ্বাসটা রাখতে বলেছিল।
শেষ পর্যন্ত ব্যাট করতে বলেছিল, তারপর যা হয় দেখা যাবে। আমি শেষ ওভারে শুধুমাত্র ছক্কাই মারতে চেয়েছিলাম। উমেশ ভাইও আমাকে বেশি চিন্তা করতে বারন করেছিল।
আমি খুব বেশিকিছু চিন্তাভাবনা করিনি। প্রত্যেকটা বল যেভাবে খেলা দরকার ছিল, সেভাবেই খেলেছি। বল এবং ব্যাটে ঠিকঠাক সংযোগ হয়েছে, নিজের উপর আস্থা ধরে রেখেছিলাম, আর সেই ফলটাই ম্যাচের শেষে হাতেনাতে পেলাম।’
শেষ ওভারে কলকাতা নাইট রাইডার্সের দরকার ছিল ২৯ রান। দলের অন্তবর্তীকালীন অধিনায়ক রশিদ খান যশ দয়ালের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন।
প্রথম ডেলিভারিটা সিঙ্গল নিয়ে রিঙ্কুকে স্ট্রাইক দিয়েছিলেন কলকাতার টেলএন্ডার উমেশ যাদব। তারপর যেটা চলল, সেটাকে ধ্বংসলীলা ছাড়া আর কীই বা বলা যেতে পারে।
শেষ ওভারের রান : ১, ৬, ৬, ৬, ৬, ৬। গুজরাট শিবিরের মুখের হাসি নিমেষের মধ্যেই ভ্যানিশ হয়ে যায়। কেকেআর ব্রিগেডের অধিনায়ক নীতীশ রানা এবং কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত হুড়মুড়িয়ে মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়েন। রিঙ্কুকে জড়িয়ে ধরে মুহূর্তটা উদযাপন করেন।
Leave a Reply