
শেষ পাঁচ বলে দরকার ছিল ২৮ রান। ম্যাচটা শেষ হয়ে গিয়েছিল বলে সকলে ধরে নিয়েছিলেন। স্রেফ একজনের মনে হয়েছিল যে ম্যাচটা এখনও জিততে পারে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)।
আর শেষ পাঁচটি বলে পাঁচটি ছক্কা মেরে কেকেআরকে জেতালেন ‘লর্ড’ রিঙ্কু সিং। সেই অবিশ্বাস্য ইনিংসের সৌজন্যে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটানসকে তিন উইকেটে হারিয়ে দিল কেকেআর।
রবিবার আমদাবাদে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে চার উইকেটে ২০৪ রান তোলে গুজরাট। রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো না হলেও কেকেআরকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন বেঙ্কটেশ আইয়ার এবং নীতীশ রানা।
কিন্তু আইয়ার আউট হওয়ার পর ১৭ তম ওভারে রশিদ খানের হ্যাটট্রিকে কেকেআরের হাত থেকে ম্যাচ বেরিয়ে গিয়েছিল। পরপর তিন বলে আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিন এবং শার্দুল ঠাকুর আউট হয়ে যান। রিঙ্কুও টাইমিং করতে পারছিলেন না। সেইসময় মনে হচ্ছিল যে দুই পয়েন্ট মাঠেই ফেলে আসছে কেকেআর।
শেষ ওভার যখন শুরু হচ্ছিল, তখন ধারাভাষ্যকাররাও গুজরাট জিতে গিয়েছে বলেই ধরে নিয়েছিলেন। আর সেটা স্বাভাবিকও। কারণ জয়ের জন্য শেষ ওভারে ২৯ রান দরকার ছিল কেকেআরের। হাতে ছিল তিন উইকেট। প্রথম বলে এক রান নিয়ে রিঙ্কুকে স্ট্রাইক দেন উমেশ যাদব।
যে রিঙ্কু সেইসময় ১৬ বলে ১৮ রানে খেলছিলেন। তারপর যে দৃশ্যের সাক্ষী থাকল আমদাবাদ, তা সম্ভবত একমাত্র ‘লর্ড রিঙ্কু’-ই পারবেন। শেষ পাঁচটি বলে পাঁচটি ছক্কা মেরে কেকেআরকে জিতিয়ে দেন রিঙ্কু।
গতবার আইপিএলে লখনউ সুপার জায়েন্টসের বিরুদ্ধে এরকমই এক অবিশ্বাস্য ইনিংসে কেকেআরকে প্রায় জিতিয়ে দিচ্ছিলেন রিঙ্কু। অবিশ্বাস্য একটি ক্যাচে ২০২২ সালে রিঙ্কুর সেই স্বপ্নপূরণ হয়নি। ২০২৩ সালে সেই বৃত্ত সম্পূর্ণ করলেন রিঙ্কু। যিনি শেষপর্যন্ত ২১ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ছ’টি ছক্কা এবং একটি চার মারেন। স্ট্রাইক রেট ছিল ২২৮.৫৭।
কীভাবে জেতালেন রিঙ্কু?
১৯.২ ওভার: অফস্টাম্পের বাইরে ফুলটস করেন যশ দয়াল। ব্যাট ছুড়ে লং-অফের পাশ দিয়ে ছক্কা মারেন রিঙ্কু।
১৯.৩ ওভার: লেগসাইডে নীচু ফুলটস। দ্রুত নিজের জায়গা বানিয়ে নেন রিঙ্কু। ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগের বাউন্ডারি দিয়ে ছক্কা মারেন।
১৯.৪ ওভার: বাজে বোলিং। পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করেন রিঙ্কু। অফস্টাম্পের বাইরে ফুলটসকে লং-অফের বাউন্ডারির উপর দিয়ে ফেলে দেন রিঙ্কু।
১৯.৫ ওভার: অফস্টাম্পের বাইরে বল। নিজেকে পুরোপুরি খুলে দেন রিঙ্কু। লং-অন বাউন্ডারির উপর দিয়ে উড়ে যায় রিঙ্কুর শট।
১৯.৬ ওভার: লং-অনের বাউন্ডারি দিয়ে ছক্কা রিঙ্কুর। অফস্টাম্পের বাইরে বল করেন দয়াল। সপাটে মারেন রিঙ্কু। বলটা একেবারে মারার জন্য সহজ ছিল না। কিন্তু রিঙ্কুর কাছে সেটা নস্যি ছিল। অবিশ্বাস্য!
Leave a Reply