বক্সিং ডে টেস্টে ভারতের জয় ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। সুপারস্পোর্টস পার্ক সেঞ্চুরিয়ানে প্রথম টেস্ট জেতার জন্য ভারতের দরকার ছিল ৬ উইকেট। আর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ২১১ রান।
অ্যাডভান্টেজে থাকা ভারতই শেষ হাসি হাসল। পেসারদের দাপটে বিরাট কোহলি অ্যান্ড কোং ১১৩ রানে টেস্ট জিতে জিতে সিরিজে ১-০ এগিয়ে গেল।
গাব্বার দূর্গে অস্ট্রেলিয়াকে বিধ্বস্ত করে টেস্ট সিরিজ জিতেছে ভারত। এবার টিম ইন্ডিয়া সেঞ্চুরিয়নে মুখোমুখি দক্ষিণ আফ্রিকার। সুপারস্পোর্ট পার্কে দক্ষিণ আফ্রিকা এর আগের ২৬টি টেস্টের মধ্যে জয় তুলে নিয়েছিল ২১টি ম্যাচে।
হেরেছিল মাত্র ২টি টেস্টে। ড্র হয়েছিল ৩টি ম্যাচ। কোনও একটি মাঠে নির্দিষ্ট কোনও দলের সাফল্যের নিরিখে সেঞ্চুরিয়নকে দক্ষিণ আফ্রিকার দূর্গ বলা মোটেও ভুল ছিল না।
সেদিক থেকে ভারত শুরুতেই কঠিন চ্যালেঞ্জে অপেক্ষা করে ছিল ভারতের সামনে। টিম ইন্ডিয়া সেই চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করে এবং সুপারস্পোর্ট পার্কে প্রথম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজিত করে সিরিজে ১-০ এগিয়ে যায়।
জয়ের জন্য ৩০৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা সামনে নিয়ে শেষ ইনিংসে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা পঞ্চম দিনের লাঞ্চের পরেই অল-আউট হয়ে যায় ১৯১ রানে। সুতরাং ১১৩ রানের বড় ব্যবধানে সেঞ্চুরিয়ন টেস্টে জয় তুলে নেয় ভারত। সুপারস্পোর্ট পার্কে নিজেদের তৃতীয় টেস্টে প্রথম জয় পেল টিম ইন্ডিয়া। এই মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা ৭ বছর পর টেস্ট হারের মুখ দেখে।
রাবাদা আউট হওয়ার ঠিক পরের বলেই সাজঘরে ফেরেন এনগিদি। ৬৭.৬ ওভারে অশ্বিনের বলে পূজারার হাতে ধরা পড়েন লুঙ্গি। ১ বল খেলে কোনও রান করার আগেই আউট হয়ে বসেন এনগিদি। বাভুমা ৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৮০ বলে ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন।
৬৭.৫ ওভারে অশ্বিনের বলে শামির হাতে ধরা পড়েন রাবাদা। ৪ বল খেলে খাতা খুলতে পারেননি তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা ১৯১ রানে ৯ উইকেট হারায়। ক্রিজে শেষ ব্যাটসম্যান লুঙ্গি এনগিদি।
৬৬.৫ ওভারে মহম্মদ শামির বলে ঋষত্ভ পন্তের দস্তানায় ধরা পড়েন মারকো জানসেন। ৩টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১৪ বলে ১৩ রান করে আউট হন জানসেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ১৯০ রানে ৮ উইকেট হারায়। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান কাগিসো রাবাদা। দ্বিতীয় ইনিংসে শামির এটি তৃতীয় উই
শেষ দিনের প্রথম সেশনে ৩টি উইকেট হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। লাঞ্চে মারকো জানসেনকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই চালাচ্ছেন তেম্বা বাভুমা। শেষ দিনের মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের শেষ ইনিংসে ৬৬ ওভার ব্যাট করে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ১৮২ রান তুলেছে।
সুতরাং, জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার আরও ১২৩ রান। ভারতের প্রয়োজন ৩টি উইকেট। বাভুমা ৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৭৮ বলে ৩৪ রান করে অপরাজিত রয়েছেন। জানসেন ১টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৯ বলে ৫ রান করে অপরাজিত রয়েছেন।
৬০.২ ওভারে শামির বলে পন্তের দস্তানায় ধরা পড়েন উইয়ান মাল্ডার। ৩ বলে ১ রান করে মাঠ ছাড়েন প্রোটিয়া তারকা। দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ ইনিংসে ১৬৪ রানে ৭ উইকেট হারায়। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান মারকো জানসেন। জয়ের জন্য ভারতের দরকার আর ৩টি উইকেট।
৫৯.৩ ওভারে কুইন্টন ডি’কককে বোল্ড করেন মহম্মদ সিরাজ। ২টি বাউন্ডারির সাহায্যে ২৮ বলে ২১ রান করে ক্রিজ ছাড়েন কুইন্টন। দক্ষিণ আফ্রিকা ১৬১ রানে ৬ উইকেট হারায়। জিততে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার আরও ১৪৪ রান। ভারতের প্রয়োজন আর মাত্র ৪টি উইকেট। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান উইয়ান মাল্ডার।
৫৬তম ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রানে পৌঁছে যায়। সুতরাং, কার্যত অর্ধেক পথ অতিক্রম করে ফেলে তারা। তেম্বা বাভুমা ১৭ ও কুইন্টন ডি’কক ১৩ রানে ব্যাট করছেন।
৫০.৫ ওভারে ডিন এলগারকে এলবিডব্লিউ-র ফাঁদে জড়িয়ে ভারতকে দিনের প্রথম সাফল্য এনে দিলেন জসপ্রীত বুমরাহ। ১২টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১৫৬ বলে ৭৭ রান করে ক্রিজ ছাড়েন প্রোটিয়া দলনায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকা ১৩০ রানে ৫ উইকেট হারায়। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি’কক।
শেষ দিনের প্রথম ৪০ মিনিটে কোনও সাফল্য নেই ভারতের। দক্ষিণ আফ্রিকা ৫০ ওভার ব্যাট করে তাদের শেষ ইনিংসে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ১৩০ রান তুলেছে। সুতরাং, জয়ের জন্য প্রোটিয়াদের দরকার আরও ১৭৫ রান। এলগাত ৭৭ ও বাভুমা ১০ রানে ব্যাট করছেন।
৪২তম ওভারে শেষ ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা দলগত ১০০ রান টপকে যায়। ৪২ ওভার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪ উইকেটে ১০১ রান। এলগার ৫৮ রানে ব্যাট করছেন। এখনও খাতা খোলেননি বাভুমা।
নির্ধারিত সময়ে শুরু সেঞ্চুরিয়ন টেস্টের পঞ্চম তথা শেষ দিনের খেলা। গত দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান এলগারের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে শেষ দিনে ব্যাট করতে নামেন তেম্বা বাভুমা। ভারতের হয়ে বল হাতে গত দিনের অসমাপ্ত ওভার শেষ করেন জসপ্রীত বুমরাহ।
সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কে দক্ষিণ আফ্রিকা ২৬টি টেস্টের মধ্যে জয় তুলে নিয়েছে ২১টি ম্যাচে। হেরেছে মাত্র ২টি টেস্ট। ড্র হয়েছে ৩টি ম্যাচ। কোনও একটি মাঠে নির্দিষ্ট কোনও দলের সাফল্যের নিরিখে সেঞ্চুরিয়নকে দক্ষিণ আফ্রিকার দূর্গ বলা মোটেও ভুল হবে না।
কেননা, এই মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের শতকরা হার ৮০.৭৭ শতাংশ। সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকা শেষবার হেরেছে ২০১৪ সালে। নতুন শতাব্দীতে সেই একমাত্র মাত্র এই মাঠে টেস্টে পরাজয়ের মুখ দেখেছে তারা।
তার পর থেকে এখানে টানা ৭টি টেস্টে জয় তুলে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এখন দেখার যে ভারতের বিরুদ্ধে সাফল্যের সেই ধারা বজায় রাখতে পারে কিনা তারা। ভারত টেস্ট জিতলে ভেঙে পড়বে সেঞ্চুরিয়নে প্রোটিয়াদের দূর্গ।
ভারত সেঞ্চুরিয়নে কখনও টেস্ট জেতেনি। এর আগে তারা এই মাঠে ২টি ম্যাচ খেলেছে। সুপারস্পোর্ট পার্কে ২০১০ ও ২০১৮ সালে যে দু’টি টেস্ট খেলেছে টিম ইন্ডিয়া, দু’টিতেই হারতে হয়েছে তাদের। প্রথম ম্যাচে জলে যায় সচিনের সেঞ্চুরি (১১১)। দ্বিতীয় ম্যাচে কোহলির শতরান (১৫৩) ব্যর্থ হয় দল হারায়।
সুপারস্পোর্ট পার্কের বাইশগজ ভাঙতে শুরু করেছে। বিপজ্জনক জায়গায় বেশ কয়েকটা ফাটল উন্মুক্ত হয়ে পড়েছে। সুতরাং, বলের বাউন্সে হেরফের হতে পারে শেষ দিনে। আচমকা লাফিয়ে ওঠা ছাড়াও নীচু হয়েও যেতে পারে একই লেনথের বল। তার উপর ফাটলে পড়ে বল বাঁক নিতে পারে। তাই ব্যাটসম্যানদের কাজ তুলনায় কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
সেঞ্চুরিয়নে ভারতের টেস্ট জয়ের স্বপ্নে আক্ষরিক অর্থেই জল ঢালতে পারে প্রকৃতি।-এর পূর্বাভাষ অনুযায়ী, পঞ্চম দিনে লাঞ্চের পরবর্তী সেশনে বৃষ্টি হওয়ার ৬৫ শতাংশ সম্ভবনা তো রয়েইছে। উপরন্তু, বজ্র বিদুৎসহ বৃষ্টির সম্ভাবনাও ৩৯ শতাংশ। সুতরাং, ম্যাচের প্রথম সেশনেই টেস্ট জিতে নেওয়ার চিন্তাভাবনা কোথাও না কোথাও বিরাট কোহলির মাথায় ঘুরপাক খাবেই।
শেষ দিনে জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ২১১ রান। ভারতের প্রয়োজন ৬টি উইকেট। জয়ের রাস্তা খোলা রয়েছে দু’দলের সামনেই। যদিও পিচ ও পরিস্থিতির নিরিখে ভারতকে তুলনায় এগিয়ে দেখাচ্ছে। এখন দেখার যে, পঞ্চম দিনে শেষ হাসি হাসে কারা।
প্রথম ইনিংসের নিরিখে ১৩০ রানে এগিয়ে থাকা ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে অল-আউট হয় ১৭৪ রানে। সুতরাং, জয়ের জন্য শেষ ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৩০৫ রানের।
চতুর্থ দিনের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ৯৪ রান তুলেছে। ক্যাপ্টেন ডিন এলগার ব্যক্তিগত ৫২ রানে অপরাজিত রয়েছেন।
ভারত প্রথম ইনিংসে ৩২৭ রানে অল-আউট হয়। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের প্রথম ইনিংসে অল-আউট হয়ে যায় ১৯৭ রানে। সুতরাং প্রথম ইনিংসের নিরিখে ১৩০ রানের লিড নেয় টিম ইন্ডিয়া।
ভারত তৃতীয় দিনের শেষে তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেটের বিনিময়ে ১৬ রান তোলে। সুতরাং, তৃতীয় দিনের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার থেকে ১৪৬ রানে এগিয়ে ছিল টিম ইন্ডিয়া।
পূর্বাভাষ মতোই সেঞ্চুরিয়ন টেস্টের দ্বিতীয় দিনে দফায় দফায় বৃষ্টি নামে। ফলে শুরুই করা যায়নি দ্বিতীয় দিনের খেলা। পরিস্থিতি খেলার অনুকূল নয় বুঝেই আম্পায়াররা দ্বিতীয় দিনের খেলা পরিত্যক্তি ঘোষণা করেন। সুতরাং, দ্বিতীয় দিনে একটিও বল খেলা হয়নি।
সেঞ্চুরিয়ন টেস্টের প্রথম দিনের শেষে টিম ইন্ডিয়া ৯০ ওভারে ৩ উইকেটের বিনিময়ে ২৭২ রান তোলে। ওপেনার লোকেশ রাহুল ১৭টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ২৪৮ বলে ১২২ রান করে অপরাজিত ছিলেন। পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নামা অজিঙ্কা রাহানে ৮টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৮১ বলে ৪০ রান করে নট-আউট ছিলেন।