জোহানেসবার্গে দ্বিতীয় টেস্টে হেরে গেছে ভারত, দারুণ জয়ের মধ্যে দিয়ে সিরিজে সমতায় ফিরে আসে সাউথ আফ্রিকা। বর্তমানে সিরিজের ফলাফল ১-১। এমন অবস্থায় আগামী ১১ ই জানুয়ারি তৃতীয় টেস্টে কেপটাউনে মুখোমুখি হতে চলেছে দুই দল।
আর সেই ম্যাচে ভারত আদৌ কি দলে পাবেন মহম্মদ সিরাজ’কে ? তা ঘিরে তৈরী হয়েছে প্রশ্ন। সদ্য সমাপ্ত টেস্ট ম্যাচের প্রথম দিন বোলিং করাকালীন হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পান, যার জেরে এরপর খেলতে নামলেও তাকে স্বাভাবিক ছন্দে পাওয়া যায়নি। তাই কতোটা চোটমুক্ত সিরাজ, তা নিয়ে সবার মনে সংশয় তৈরী হয়েছিল। এদিন খেলা শেষে ভারত অধিনায়ক রাহুল’কে সিরাজের বিষয় জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,
হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট লাগলে সেরে উঠতে বেশ খানিকটা সময় লাগে, তাই এখনই সিরাজের খেলার বিষয়ে কোনও রকম নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না। তবে দলে ইশান্ত, উমেশের মতো অভিজ্ঞ পেসাররা আছে। অন্যদিকে ভারতের কোচ রাহুল দ্রাবিড় যা বলেছেন, তার সারমর্ম একই রকম।
অর্থাৎ সিরাজ আদৌও কেপটাউনে অনুষ্ঠিত হতে চলা টেস্ট ম্যাচে খেলবেন কিনা, তা ঘিরে ধোঁয়াশা অব্যাহত। প্রসঙ্গত, অবশেষে জোহানেসবার্গে ভারত’কে টেস্ট ম্যাচে হারিয়ে দিলো সাউথ আফ্রিকা।
প্রোটিয়াস অধিনায়ক ডিন এলগারের অপরাজিত ৯৬* রানের ইনিংসের সৈজন্যে ৬ ই জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ৭ উইকেটে ভারত’কে হারিয়ে দিলো সাউথ আফ্রিকা। পাশাপাশি ৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ফিরে এলো সমতায়। বৃষ্টির জেরে এদিনের অধিকাংশ খেলাটাই হয়নি। আকাশের মুখ হালকা হলে শুরু হয় অন্তিম সেশনের খেলা। গতকালের স্কোর ছিলো ১১৮/২। ফের ব্যাটিংয়ে নামলেন সাউথ আফ্রিকার অধিনায়ক ডিন এলগার এবং রাসি ভ্যান দার দাসেন।
৪ মেরে নিজের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন অধিনায়ক এলগার। পাশাপাশি দুজনে জুঁটিতে’ও জুড়ে ফেলেন হাফ সেঞ্চুরি। সাউথ আফ্রিকা পেরিয়ে যায় ১৪০ রানের গন্ডি। অর্থাৎ জয়ের জন্য এলগার’দের প্রয়োজন ছিলো আর ১০০ রান, হাতে ৮ উইকেট। শুরু’তে রক্ষণাত্মক থাকলেও পরবর্তী সময়ে হঠাৎ’ই ভারতীয় বোলারদের উপর আক্রমণ শুরু করে সাউথ আফ্রিকার ব্যাটার’রা। শামি কে চেঞ্জ করে শার্দুল ঠাকুর’কে অ্যাটাকে এনেও বিশেষ কিছু একটা করে উঠতে পারেননি অধিনায়ক রাহুল।
যদিও এরপর শামি’র বলে স্লিপে দাড়িয়ে থাকা পূজারা’র হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান দাসেন (৪০), সাউথ আফ্রিকার স্কোর তখন ১৭৫। এলগারের উইকেট তুলে নেওয়ার সুযোগ এসেছিলো শামি’র কাছে, কিন্তু বল স্লিপের ফিল্ডারের হাতছানি’র বাইরে দিয়ে চলে যায় বাউন্ডারি’লাইনে।
আরও একবার সাউথ আফ্রিকার শিবিরে আঘাত হানার সুযোগ পেয়েছিলো শার্দুল, যিনি এর আগের ইনিংসে ৭ উইকেট নিজের দখলে করেছিলেন। তিনি তেম্বা বাভুমা’কে কট এ্যান্ড বোল্ড করার সুযোগ হাতছাড়া করেন।
এদিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিলেন এলগার, চালিয়ে খেলতে শুরু করেন শামির বিরুদ্ধে। তিনি প্রবেশ করেন ৭০ এর ঘরে, স্কোরবোর্ডে ১৯০ স্পর্শ করে সাউথ আফ্রিকা। এই টেস্ট ম্যাচ জয়ের জন্য তখন প্রোটিয়াস’দের আর প্রয়োজন ছিলো আর মাত্র ৫০ রান।
একদিকে যখন মরিয়া হয়ে একটি উইকেট তুলে নেওয়ার চালাচ্ছে ভারত, তেমনই অন্যদিকে দলকে ২০০ রানের গন্ডি পেরিয়ে ক্রমশ জয়ের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন এলগার-বাভুমা জুঁটি।
শামি’র উপর যেমন প্রহার করেছিলেন ঠিক তেমনই সিরাজের উপরেও চড়াও হয়ে ওঠেন এলগার। ফল স্বরূপ এক ওভারে ১৮ রান হজম করেন সিরাজ। ক্রমশ ম্যাচ ভারতের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।শেষে চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি সিরিজে দেশকে সমতায় ফিরিয়ে আনেন প্রোটিয়াস অধিনায়ক ডেন এলগার। ৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের বর্তমান ফলাফল ১-১। পরবর্তী ম্যাচ শুরু হবে ১১ ই জানুয়ারি, কেপটাউন।